:
তিন জেলা চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও রাঙামাটিতে প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসে এ পর্যন্ত ৩১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দুর্গম অঞ্চল হওয়ায় কোথাও কোথাও এখনো মাটি চাপা পড়ে আছেন মানুষ।
চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, জেলার চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় ধসে ১২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি এলাকায় পাহাড় ধসে এক শিশুসহ চারজন নিহত হয়।
মঙ্গলবার ভোরে পাহাড় ধসের এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো দুইজন। তাদের বান্দরবান হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতরা হলো- শিশু মাহিয়া, অন্য একটি পরিবারের দুই শিশু কেউচা কেয়াং (১০), মেমাউ কেয়াং (১৩) ও গৃহবধূ মোকাইং কেয়াং (৫০)। আহতরা হলেন- একই পরিবারের সানুউ কেয়াং (২১) ও বেলাউ কেয়াং (২৮)।
ধোপাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ চৌধুরী পাহাড় ধসে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী আসগর আলীর কাঁচা ঘরের ওপর মাটি ধসে পড়ে। এ ঘটনায় আজগর আলীর শিশুকন্যা মাহিয়া মাটির নিচে চাপা পড়ে মারা যায়।
একই এলাকার ছনবুনিয়া উপজাতি পাড়ায় একটি ঘরের ওপর পাহাড় ধসে একই পরিবারের দুই শিশু কেউচা, মেমাউ ও গৃহবধূ মোকাইং কেয়াং নিহত হন।
চন্দনাইশ থানার ওসি (তদন্ত) মো. শাখায়াত হোসেন বলেন, ধোপাছড়ি এলাকাতে পাহাড় ধসে চারজনের মৃত্যুর খবর শুনেছি। কিন্তু আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারছি না। ইউনিয়নটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় অনেকটা বিচ্ছিন্ন।
এদিকে রাঙ্গুনিয়ার রাজানগর ইউনিয়নের বগাবিলিসহ এই উপজেলায় পাহাড় ধসে আটজনের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম পাহাড় ধসে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে পারেননি। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। অপর চারজন নিহতের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনো জানা যায়নি।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর ফইল্যাতলী এলাকায় দেয়াল ধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হোসেন। নিহতের নাম মোহাম্মদ হানিফ (৪৫)।
রাঙামাটি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, রাঙামাটি শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় প্রবল বর্ষণের ফলে পাহাড় ধসে গতরাত ও আজ সকাল পর্যন্ত অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন ।
সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ১১ জনের লাশ এসেছে। বিভিন্ন স্থানে ঘরের ওপর পাহাড় ধসের ঘটনায় নিহত হয়েছেন তারা। নিহতরা হলেন- রুমা আক্তার, নুরিয়া আক্তার, হাজেরা বেগম, সোনালি চাকমা, অমিত চাকমা, আইয়ুশ মল্লিক, লিটন মল্লিক ও চুমকি দাশ। তাৎক্ষণিকভাবে বাকি তিনজনের নাম জানা যায়নি।
একই সময়ে কাপ্তাই উপজেলার রাইখালি ইউনিয়নের কারিগরপাড়া এলাকায় মাটিচাপা পড়ে উনু চিং মারমা ও নিকি মারমা নামের দুইজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন রাইখালি ইউপি চেয়ারম্যান ছায়ামং মারমা।
অন্যদিকে কাপ্তাই উপজেলার নতুন বাজার এলাকায় গাছ চাপা পড়ে আবুল হোসেন (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং ইকবাল নামের এক ব্যক্তি কর্ণফুলি নদীতে নিখোঁজ হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন।
এ ছাড়া প্রবল বর্ষণে রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন স্থানে মাটিচাপা পড়েছে অনেকে। রাঙামাটির কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহম্মদ রশীদ জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। অনেক স্থানেই এখনো মানুষ মাটি চাপা পড়ে আছে।
তিনিধি জানিয়েছেন, বান্দরবান শহরের বালাঘাটা, লেমুঝিড়ি পাড়া ও আগা পাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন পাঁচজন।
নিহতরা হলেন- রেবা ত্রিপুরা (২৪), লতা বড়ুয়া (৭), মিতু বড়ুয়া (৫), শুভ বড়ুয়া (৪), কামরুন নাহার (৪০) ও সুপ্রিয়া বেগম (৮)। আহতরা হলেন- পসান ত্রিপুরা (২২), বীর বাহাদুর ত্রিপুরা (১৬) ও দুজাকিন ত্রিপুরাসহ (২৬) আরো দুজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বান্দরবান জেলা শহরের বালাঘাটা পুলিশ ক্যাম্প এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় হতাহতরা ঘরের মধ্যে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। হঠাৎ পাহাড় ধসে ঘরের ওপর পড়লে ঘুমন্ত অবস্থায় চাপা পড়ে রেবা ত্রিপুরা মারা যান।
অন্যদিকে রাতে শহরের লেমুঝিড়ি পাড়া ও আগা পাড়ায় অনুরূপভাবে পাহাড় ধসে আরো পাঁচজন নিহত ও চারজন আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ব্যাপারে বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সাব অফিসার স্বপন কুমার বোস বলেন, ঘটনার পর আমরা মাটির নিচ থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।
নায়িকা দীঘির বিরুদ্ধে কোটি টাকার মামলা করবেন
স্বনামধন্য নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত মুক্তি প্রতীক্ষিত ছবি ‘তুমি আছো তুমি নেই’র পোস্ ...বিস্তারিত