ফুলগাজী ও পরশুরামে বন্যায় সীমাহীন লোকসানে মৎস্যচাষীরা, পানিতে ভেসে গেছে প্রায় ১৩ কোটি টাকার মাছ, সরকারের সহযোগিতা চায় চাষীরা।. বিশেষ প্রতিনিধি ঃ পাহাড়ী ঢল আর অবিরাম বর্ষণে মুহুরী-কহুয়া ও সিলোনিয়া নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে বয়ে যাওয়া বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফুলগাজী ও পরশুরামের মৎস্য চাষীরা।এই দুই উপজেলায় পুকুর ও খামারের প্রায় ১৩ কোটি টাকা মাছ ভেসে গেছে। অনেক মৎস্য খামারী ও চাষী ঋণ পরিশোধ নিয়ে দু:চিন্তায় পড়েছেন। বর্তমানে পানি কমতে শুরু করায় কৃষক ও খামারিদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসলেও ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানো অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। এজন্য তারা সরকারি সহযোীতা কামনা করেন। জেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানা গেছে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার মাছ চাষী ও খামারীদের পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ফুলগাজী উপজেলার অন্তত ৯৭০টি পুকুরের ৬৮৫ মেট্টিক টন মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এ উপজেলায় মৎস্য খামারী ও চাষীদের ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে মৎস্য বিভাগ দাবী করেছে। এর মধ্যে ৫০ লক্ষাধিক মাছের পোনা রয়েছে। ভেসে যাওয়া মাছের আনুমানিক মূল্য ১০ কোটি ৩০ লাখ টাকা ও পোনার আনুমানিক মূল্য ধরা হয় ৫০ লাখ টাকা। উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নে ৮ শতাধিক পুকুর থেকে ৪শ’ মেট্টিক টনের বেশি মাছ ভেসে গেছে বলে জানান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান। যার আনুমানিক মূল্য ৭ কোটি টাকার বেশি বলে দাবী করছেন খামারি ও চাষীরা। এই ইউপির উত্তর নিলখী গ্রামের আবুল কালামের ছেলে হারুন জানান তিনি প্রবাস থেকে দেশে ফিরে তার রোজগার দিয়ে মৎস্য চাষ করে স্বাবলম্বী হতে চেয়েছিলেন। কিছুটা সফলও হয়েছিলেন। তাই এবছর আরো দুটি বড় পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেন। কিন্তু বন্যার পানিতে তার সবগুলো পুকুর ডুবে যায়। এতে তার প্রায় ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায়। এদিকে পরশুরামে দেড়শতাধিক পুকুর থেকে ৭৫ মেট্টিক টন মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। যার আনুমানিক মূল্য ৯০ লাখ ১০ হাজার টাকা। এ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের মৎস্য চাষীরা। এখানে ৭০টি পুকুর থেকে প্রায় ৩৪ মেট্টিক টন মাছ ভেসে গেছে। যার আনুমানিক মূল্য ৪০ লাখ ৮০ হাজার টাকা বলে দাবী করে আসছেন চাষী ও খামারিরা। এছাড়াও পরশুরাম পৌর এলাকায় ২০টি, মির্জা নগর ৫০টি ও চিথলিয়া ইউনিয়নের ১০টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। গত বৃহস্পতিবার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার নদী রক্ষা বাঁধের কয়েক স্থানে ভাঙনে অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।