লোকমান বিএসসিঃ ফেনীর ফুলগাজীতে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় এক বিধবা মহিলার ভাতার বই মিলল। তার নাম ছেমনা আকতার। স্বামী সন্তান হারা এই মহিলার বাড়ি উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ তারাকুছা গ্রামে। রোববার ৯ জুলাই দুপুরে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় ছেমনার বাড়িতে গিয়ে তাঁর হাতে বিধবা ভাতার বই তুলে দেন আমজাদহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিরহোসেন মিরু। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, ফুলগাজী প্রেসক্লাবের সভাপতি মো.সাহাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক লোকমান আলী বিএসসি। গত ৪ এপ্রিল এ প্রতিবেদক ব্যক্তিগত কাজে আমজাদহাট ইউপি কার্যালয়ে আসেন। সেখানে ৬ জন বিধবা মহিলার ভাতার কার্ড বই মিললেও দুজন মাঝবয়সী বিধবা মহিলা চেয়ারম্যানের কাছে একটা কার্ডের অনেক আকুতি জানাচ্ছেনন। একজনের নাম ছেমনা আক্তার, আরেকজন নুর জাহান। ছেমনার স্বামী, সন্তান কেউই জীবিত নেই। নুর জাহানের স্বামী মারা গেছেন বেশ কিছুদিন হল। চার ছেলে মেয়ে।দুজনের বাড়ী আমজাদহাট ইউপির তারাকুছায়।অভাব অনটনের সংসার।একদিনের সংস্থান হলে আরেকদিন কিভাবে চলবে জানে না তারা। তাই স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে আকুতি একটা কার্ড বা কিছু সহযোগীতার জন্য। চেয়ারম্যান জানালেন তিনি এসব দায়িত্ব মেম্বারদের দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ আগের চেয়ারম্যানেরর বাড়ীর পাশ্বে তাদের বাড়ী। কিন্তু কখনো তার কাছ থেকে কোনো সহযোগীতা পাননি।তাদের অনুনয় -বিননয়ে স্থির থাকা গেল না। কিভাবে চলেন? উপস্থিত সংবাদকর্মীর এমন প্রশ্নের জবাবে একজনের সোজা- সাপ্টা উত্তর, " অন্যের বাড়ীতে কাজ করি"। অপরজন নিরুত্তর। এবিষয়ে কথা বলেন চেয়ারম্যান মির হোসেন মিরু। তিনি বলেন নুর জাহানের মেয়ের স্কুলে ভর্তি ও স্কুল ড্রেসের জন্য তিনি আর্থিক সাহায্য করেন। তবে ছেমনা আক্তার কখনো সাহায্যের জন্য আসেননি। উভয়ই অত্যন্ত গরীব। কিন্তু তার ইউপিতে বিধবা ভাতার কার্ড পেয়েছেন ৬ টি। হাতে ১ টা বয়স্ক ভাতার কার্ড ছিল। কিন্তু তাদের কারোরই বয়ষ ৬২ বছর নয়। তিনিও এবিষয়ে সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। বিষয়টি নিয়ে সাপ্তাহিক হকার্স, ফেনী সিটিজেন ভয়েস সহ একাধিক অনলাইন পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় এবং একই সাথে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আলিম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কিসিঞ্জার চাকমা ও উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। পরে ছেমনা আকতারকে বিধবা ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে সাংবাদিকদের আশ্বস্থঃ করেন ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলিম। রোববার দুপুরে ছেমনার হাতে বিধবার কার্ডটি দেওয়ার সময়ে তিনি আনন্দে আল্পুত হয়ে চোখের পানি মুছতে দেখা যায়। বিয়ের অনেক পরেই স্বামী আবুল কালাম মারা যান। নিঃসন্তান ছেমনার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্দকার। তারপরেও ছেমনার জীবন চলছে জীবনের নিয়মে ।