মোতাহের হোসেন ইমরান : যাত্রী ছাউনিতে এক পাশে দোকান, বাকি অংশে ভাসমান দোকানের মালপত্র। সোনাগাজী-ফেনী সড়কের ডাকবাংলা যাত্রীছাউনিটির অবস্থা এখন এমনই। একই চিত্র সোনাগাজী উপজেলার অধিকাংশ যাত্রীছাউনির। সরেজমিন দেখা যায়, জেলা পরিষদ নির্মিত এসব ছাউনির অধিকাংশরেই যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ কক্ষ পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। সোনাগাজী বাসষ্ট্যান্ড, ডাকবাংলা, মতিগঞ্জ, বখতারমুন্সী কলেজ গেইট, ভৈরব চৌধুরী বাজার, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের সামনে ফেনী জেলা পরিষদের যাত্রী ছাউনি রয়েছে। সোনাগাজী পৌর শহরের হাজী রহীম উল্লাহ মার্কেটের সামনে সোনাগাজী টু ফেনী রুটের যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি অটোরিক্সা, হিউম্যান হলার (উপকূল সার্ভিস) থামে। প্রায় সময় থাকে যাত্রীদের জটলা। ওই স্থানে অপেক্ষারত যাত্রীদের বসার জন্য কোন যাত্রী ছাউনি নেই। যাত্রী ছাউনি রয়েছে ২০০ গজ দূরত্বে বাস ষ্ট্যান্ডে (যেখানে কোন যাত্রী যায় না)। কিন্তু সেই ছাউনি যাত্রীদের কোনো কাজেই আসছে না। সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থিত যাত্রী ছাউনির সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দেখা যায়, যাত্রী ছাউনির একপাশে দোকান অন্য পাশে যাত্রী বসার স্থানে কয়েকটি কুকুর ও একজন মানষিক ভারসাম্যহীন মানুষ শুয়ে আছে। ফ্লোরে ফাটল ধরেছে এবং মেঝেতে ঘাসে ভরপুর হয়ে আছে। ঘাসগুলো প্রায় ১ ফুট পরিমান বড় হয়ে গেছে। যাত্রী ছাউনির সামনেই অপেক্ষমান কয়েকজন যাত্রীর সাথে কথা হয়। তারা অভিযোগ করেন, বসার পরিবেশ না থাকায় যাত্রী ছাউনি ব্যবহার করেন না তারা। সোনাগাজী টু মুহুরী প্রজেক্ট সড়কের ভৈরব চৌধুরী বাজারের যাত্রী ছাউনিটি দখল করে দীর্ঘদিন থেকে চলছে চা দোকানের ব্যবসা। যাত্রী বসার কোন জায়গা নেই। স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, যাত্রী ছাউনি দেখার কি কোন লোক নেই? যে যখন সুযোগ পায় দখল করে রাখেন। যাত্রীদের কাজে যদি না আসে এমন যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করে লাভ কি ? ফেনী জয়নাল হাজারী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সামিয়া তাবাচ্ছুম বলেন, আমার বাড়ি বখতারমুন্সীতে, নিয়মিত কলেজে যেতে ডাকবাংলায় গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করতে হয়, সেখানে যাত্রী ছাউনি আছে, কিন্তু যাত্রী বসার জায়গা নেই। যাত্রী বসার স্থান দখল করে চলছে চা দোকানের ব্যবসা। তিনি আরো জানান, যাত্রী ছাউনি নির্মাণ যাত্রীদের কল্যাণের জন্য। বৃষ্টি বা অতিরিক্ত গরম থেকে রক্ষা পেতেই মূলত যাত্রী ছাউনিগুলো নির্মাণ করা। কিন্তু দেখা গেছে, জেলা পরিষদ যেসব যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করেছে, সেগুলো যাত্রীদের কোনো কাজেই আসছে না। ওমর ফারুক নামে একজন স্কুল শিক্ষক জানান, এখন যুগ বদলাইছে, যাত্রী ছাউনি অনুযায়ী গাড়ি থামে না। যাত্রী যেখানে দাঁড়ায় গাড়ীও সেখানে দাঁড়ায়। ভবিষ্যতে যাত্রী ছাউনি নির্মাণের ক্ষেত্রে জনবহুল এলাকাকে প্রাধান্য দেয়ার অনুরোধ করছি। ফেনী জেলা পরিষদের সদস্য ও সোনাগাজী উপজেলা বিআরডিবি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন বলেন, জেলা পরিষদ নির্মিত যাত্রী ছাউনিগুলোর আধুনিকায়ন ও তদারকির জন্য কয়েকটি সভায় দাবী উত্থাপন করা হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই এসব ব্যাপারে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।