 
                      
                    
                    
                    
                        
                        জেলা প্রশাসক ও নবাবপুর ইউপি চেয়ারম্যানের মানবিক উদ্যোগে
বদলে গেল পঙ্গু ব্যক্তির জীবন
সোনাগাজী প্রতিনিধি :
সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মহদিয়া গ্রামের মো. ছানা উল্লাহ (৩২) দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। দুই পা সম্পূর্ণ অচল হওয়ায় তিনি চলাফেরা করতে সম্পূর্ণভাবে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। একসময় ব্যবহৃত একটি ইলেকট্রিক হুইলচেয়ার থাকলেও সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর থেকে অনেকটা ঘরবন্দি জীবন তার নিয়তি হয়ে দাঁড়ায়।
ছানা উল্লাহর জীবন সংগ্রামের করুণ চিত্র সাপ্তাহিক হকার্সসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের। মানবিক বিবেচনায় প্রথমে এগিয়ে আসেন নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম জহির। তিনি ছানা উল্লাহর অবস্থার কথা ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামকে জানান। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে জেলা প্রশাসক ছানা উল্লাহর পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন এবং তার জীবনকে কিছুটা স্বাভাবিক করতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে নবাবপুর ইউনিয়নের বন্দর মার্কেট এলাকায় এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে ছানা উল্লাহকে একটি নতুন ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার হস্তান্তর করেন ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ও নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির। এসময় উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখতার হোসেন মজুমদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ) রোমেন শর্মা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিয়া হোসেন, উপজেলা প্রকৌশলী মনির হোসেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অলোক দাস, সেকশন অফিসার আবু মুসা রকি, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিউল আলম এবং নবাবপুর ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, “ছানা উল্লাহর মতো সংগ্রামী মানুষরা আমাদের অনুপ্রেরণা। তারা সমাজের বোঝা নয় বরং সাহস ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে, যারা শুধুমাত্র একটি সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। আমরা চাই, সবাই যেন সমানভাবে জীবনের সুযোগ পায়। এই হুইল চেয়ার তার চলার পথে নতুন আলো জ্বালাবে বলে আশা করছি।”
নবাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির বলেন,“ছানা উল্লাহর গল্প আমাদের নাড়া দিয়েছে। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এটি আমার দায়িত্ব ছিলো তার পাশে দাঁড়ানো। শুধু একবার নয়, এমন অসহায় মানুষদের জন্য আমাদের পাশে দাঁড়াতে হবে বারবার। সমাজের সবাইকে নিয়ে এগোতে হবে।”
ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার পেয়ে আবেগাপ্লুত ছানা উল্লাহ বলেন, “এটা শুধু একটা চেয়ার না, এটা আমার চলার সাহস, আত্মসম্মান আর নতুন জীবন। জেলা প্রশাসক স্যার ও চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে আবার বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আমি কৃতজ্ঞ।”
ছানা উল্লাহ আরও জানান, “আমার দুইটি ছোট মেয়ে আছে। পরিবারে ৮ জন সদস্য। একটা ছোট দোকান চালিয়ে সংসার চলে। কিন্তু শারীরিক দুর্বলতায় দোকানে যেতেও কষ্ট হতো। এখন হুইলচেয়ারে নিজেই চলাফেরা করতে পারবো, নিজের হাতে উপার্জন করতে পারবো।”
হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা যদি সত্যিকারের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে আসেন—তবে একটি ছোট সহায়তাও হয়ে উঠতে পারে কারও জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার কারণ। এটি শুধু একটি হুইল চেয়ার প্রদানের ঘটনা নয়, এটি একটি রাষ্ট্রীয় দায়িত্ববোধ, মানবিকতা ও সমাজে সহানুভূতির চর্চার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।                        
 
						
				
				
								
				নায়িকা দীঘির বিরুদ্ধে কোটি টাকার মামলা করবেন
স্বনামধন্য নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত মুক্তি প্রতীক্ষিত ছবি ‘তুমি আছো তুমি নেই’র পোস্ ...বিস্তারিত

 
           
                                _21-02-2018.jpg) 
                                 
                                 
                                 
                                _11-7-2017_(3).jpg) 
                                 
	                 
	                 
	                 
	                 
  
    













