মুহাম্মদ আবু তাহের ভূঁইয়া :
সোনাগাজীর আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারটি আয়তন ও পরিধির দিক দিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খামার। এ খামার থেকে বাচ্চা কিনে উপকূলীয় অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অনেকেই হাঁস পালনের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করছেন। খামারের হাঁসের বাচ্চা বৃহত্তর নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষুদ্র খামারিদের কাছে বিক্রি করা হয়। এতেই রচিত হয় নি¤œবিত্ত পরিবার মধ্যবিত্ত পরিবারে পদার্পনের ইতিহাস। 
সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু তদারকি করা গেলে খামারটি দারিদ্র বিমোচনে আরো বেশি ভূমিকা রাখবে বলে স্থানীয়রা মনে করেন। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, অপ্রতুল শেড, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে সম্ভাবনাময় খামারটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। এতে ব্যহত হচ্ছে হাঁসের বাচ্চা ও ডিম উৎপাদন।
সোনাগাজীর আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোঃ জাহিদ বিন রশিদ আল নাহিয়ান জানান, সোনাগাজী বাজারের পশ্চিম পাশে ১১ একর ভূমির ওপর ২০০০ সালে হাঁস প্রজনন খামার প্রকল্প শুরু হয়। হাঁস পালনের জন্য নির্মাণ করা হয় ৯টি শেড, একটি দোতলা অফিস ভবন, একটি হ্যাচারি, একটি গোডাউন, একটি অফিসার্স কোয়ার্টার ও একটি ডরমেটরি। তবে ১৯৬৭ সালে এই স্থানটি মেষ পালন খামার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই অঞ্চলে মেষের উপযোগিতা না থাকায় কালক্রমে তা বন্ধ হয়ে যায়।
খামারটিতে একজন খামার ব্যবস্থাপক পদ থাকলেও তা দীর্ঘদিন শূন্য, ্ঔ পদে হাঁস-মুরগী উন্নয়ন কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে আছেন। একজন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা কাম ক্যাশিয়ার পদ থাকলেও তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ প্রেষণে নরসিংদীতে কর্মরত আছেন। অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর ও পরিচর্যা কর্মীর পদ অনেকদিন ধরে খালি এবং চারজন ডাক এ্যাটেনডেন্টের মধ্যে দুইজন কর্মরত আছেন। বর্তমানে একজন পোল্ট্রি টেকনিশিয়ান ও একজন ইলেকট্রিশিয়ান আছেন। জনবল সংকটে খামারে ডিম স্থানান্তর, সংরক্ষণ, বাচ্চা পরিচর্যা, সরবরাহসহ আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
খামারটির পোল্টি টেকনিশিয়ান শফিকুর রহমান জানান, খামারে ডিম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বছরে সোয়া দুই লাখ হলেও এবার উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজারটি। তেমনি হাঁসের বাচ্চার লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ হলেও, অর্জন হয়েছে ১ লাখ ৯৩।
এই খামারে একদিন বয়সের হাঁসের বাচ্চার বিক্রি হয় ২০ টাকায়। একই হাঁসের বাচ্চা বাজারে বিক্রি হয় ৪০-৫০ টাকায়। খামারে উৎপাদিত হাঁস অন্য হাঁসের তুলনায় আলাদা। দৈহিক গঠন অন্য হাঁসের চেয়ে বেশ বড় হয়। বছরের ১০ মাস ডিম দেয় খামারের হাঁসগুলো। ইতালি থেকে আনা ভিক্টোরিয়া ইনকিউবিটরের মাধ্যমে এখানে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো হয়।
খামারে উৎপাদিত হাঁসের জাতের মধ্যে রয়েছে চায়না পিকিং, বেইজিং, খাকি ক্যাম্বল, ভারতীয় রানার, জিংডিং ও দেশী কালো হাঁস। 
সোনাগাজীর আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোঃ জাহিদ বিন রশিদ আল নাহিয়ান বলেন, দীর্ঘদিন থেকে জনবল সংকটে খামারের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জনবল নিয়োগ দেওয়া না হলে খামারের উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আশংকা রয়েছে।
সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন বলেন, চাহিদার তুলনায় এখানে উৎপাদনে অনেক গ্যাপ রয়েছে। এটা দূর করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। এটা আধুনিকায়ন, জনবল সৃষ্টি, সরবরাহ বাড়ানোসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে ইতোমধ্যে কথা চলছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক মো: ওয়াহিদুজজামান বলেন, আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারে যারা কাজ করছেন, তারা খুব ভাল কাজ করছেন। হাঁসের প্রজননও হচ্ছে। এখানে যদি আমরা লোকবল বাড়াতে পারি, তাহলে আরো বেশী উৎপাদন সম্ভব। এখানে লোকবল যাতে বেশী পাওয়া যায়, তার জন্য আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পত্র লিখবো।
                        
						
				
				
								
				নায়িকা দীঘির বিরুদ্ধে কোটি টাকার মামলা করবেন
স্বনামধন্য নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত মুক্তি প্রতীক্ষিত ছবি ‘তুমি আছো তুমি নেই’র পোস্ ...বিস্তারিত

          
                                
                                
                                
                                
                                
                                
	                
	                
	                
	                
  
    












