কাজ করার জন্য পূর্বপরিচিত মোবারক হোসেনকে বাড়িতে ডেকেছিল পারুল আক্তার। রাত ১০টার দিকে স্বজনরা দেখতে পান, ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে
প্রবাসী আতাউর রহমানের স্ত্রী পারুলের মরদেহ। খবরশুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন তাদের বাসায়। খবর
দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে। লাশের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় শার্টের দুটি বোতাম। সেই বোতামের সূত্র ধরেই খুনিকে শনাক্ত
করে পুলিশ।
গত ১৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত সোয়া ১০টার দিকে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের
উত্তর বারাহিগুণি ছেরাজ মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় দাগনভূঞা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের
করা হয়। পরে হত্যার রহস্য উদঘাটনে নামেন পুলিশ।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে এঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোবারক হোসেনকে (২০)
গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার দেওয়া
তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ইহাব হোসেন শুভ (২০) এবং আব্দুল আউয়াল প্রকাশ সাদ্দামকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) আদালতে
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মোবারক। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত মোবারক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ৩-এর পৃষ্ঠায় দেখুন
শার্টের বোতামের সূত্র ধরে সূত্রে জানা গেছে। গ্রেপ্তারকৃত মোবারক হোসেন লক্ষীপুর জেলার সদর উপজেলার টুমচুর গ্রামের মঈন উদ্দনের ছেলে। বর্তমানে সে ফেনী সদর উপজেলার মাথিয়ারা এলাকার বাসিন্দা। অন্যজন ইহাব হোসেন শুভ ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামের আফজল মিস্ত্রী বাড়ির মো. সেলিমের ছেলে। গ্রেপ্তারকৃত আরেকজন আব্দুল আউয়াল প্রকাশ সাদ্দাম দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের উত্তর বারাহিগোবিন্দ গ্রামের মৃত হাজী সিরাজ মিয়ার ছেলে।
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাশিম বলেন, গ্রেপ্তারকৃত
মোবারক ওই বাড়িতে মাঝেমধ্যে ছোটোখাটো কিছু কাজ করতো। সেই
সুবাদে ওই মহিলাকে নানি বলে সম্বোধন করতো। ঘটনার কয়েকদিন আগেও
নিহতের ছেলে তন্ময় তাদের বাড়িতে কাজের জন্য মোবারককে তার মা
ডেকেছে বলে জানায়। পরে এ সুযোগে মোবারক ঘটনার দিন তার অন্য দুই
সহযোগী নিয়ে ওই বাড়িতে ডাকাতি করে। সেখানে তাদের চিনে ফেলায় দুই
সহযোগীসহ মোবারক পারুল আক্তারকে গলা চেপে ধরে। তাদের হাত থেকে
বাঁচতে ধস্তাধস্তি করেন পারুল আক্তার। এ সময় মোবারকের হাতে কামড়
দেন তিনি। যা গ্রেপ্তারকৃত আসামি মোবারকের হাতে দেখতে পায় পুলিশ।
একইসময় নিহতের লাশের পাশ থেকে উদ্ধার করা দুটি শার্টের বোতামের
সাথে মোবারকের শার্টের বোতামের মিল পাওয়া গেছে।
ওসি বলেন, স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তারা ওই মহিলাকে হত্যা করতে চাননি।
ডাকাতির একপর্যায়ে ওই নারী মোবাইল ফোনে ভিডিও চিত্র ধারণ করার চেষ্টা
করলে তারা ওই মহিলাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় প্রথমে আসামি মোবারককে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার দেওয়া তথ্যমতে পরে অন্য দুইজন শুভ ও সাদ্দামকে তাদের নিজ বাড়ি
থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।