এমএ হাসান:সীমান্তবর্তী উপজেলা পরশুরামে সৌদি আরবসহ মরু অঞ্চলের দেশগুলোর জনপ্রিয় ফল রক মেলন চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন প্রবাসী শেখ আহম্মদ। বিদেশী এই ফল বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন তিনি। এ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন প্রায় ২ লাখ টাকার রক মেলন।বিদেশে এটিকে 'সুইট মেলন' ও বলা হয়। পাশাপাশি চাষ করেছেন বারোমাসি তরমুজ। সাধারণ তরমুজের চেয়ে বেশ মিষ্টি বারোমাসি তরমুজ।
উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের উত্তর কাউতলী গ্রামের প্রবাসী শেখ আহম্মদ। ২০০৭ সালে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে শুরু করেন কৃষিকাজ। মাথায় ঘুরতে থাকে নতুন কিছু চাষ করবেন। চলতি বছর বাড়ির পাশে দুই বিঘা জমি লিজ নেন। চট্টগ্রামের লালদিঘীর পাড়ের একটি বীজ দোকান থেকে বীজ এনে নিজস্ব প্রযুক্তিতে চাষাবাদ শুরু করেন তিন রকমের রক মেলন।
শেখ আহম্মদ বলেন, তাঁর ২ বিঘা জমিতে প্রায় ৩ হাজার রক মেলন হয়েছে। প্রতিটি প্রায় দুই থেকে তিন কেজি ওজনের হয়েছে। মার্চ মাসের শেষের দিকে তিনি বীজতলায় এর চারা রোপণ করেছিলেন। ৭০ দিনের মাথায় ফল উঠতে শুরু করেছে। জমি লিজ নেয়া ও চাষসহ খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা।
তিনি বলেন, কোন সময়ে বীজবপন,সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে সঠিক জানা নেই। যার কারণে কয়েকলাখ টাকার ফল নষ্ট হয়ে গেছে।
আগামী বছর কৃষি বিভাগের সহায়তা পেলে ২ বিঘা থেকে অন্তত ৫ লাখ টাকার রক মেলন বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ আহম্মদ।
লতানো গাছের মতো বাঁশের কাঠিতে বেয়ে উঠে এ গাছ। তবে শেখ আহম্মদ তরমুজের মতো মাটিতেই ফলিয়েছেন এ ফল। রক মেলনের একটি হচ্ছে হলুদ মসৃণ খোসা,আর অন্যটির খোসার অংশ খসখসে। স্বাদও কিছুটা ভিন্ন। রক মেলনের পাশাপাশি ফলিয়েছেন ছোট্ট আকারের বারোমাসি মিষ্টি তরমুজ। এটির চাষও এ অঞ্চলে প্রথম।
পরশুরাম বাজারের ফল ব্যবসায়ী মো মাসুদের কাছে কেজি ১৫০ টাকা করে পাইকারি দরে বিক্রি করেছেন রক মেলন। তরমুজ বিক্রি করছেন কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ টাকার রক মেলন ও বারোমাসি তরমুজ বিক্রি করেছেন।
ফল ব্যবসায়ী মো মাসুদ জানান, অচেনা ফল।মানুষের আকর্ষণ রয়েছে। দোকানে তোলার সাথেই বিক্রি হয়ে যায়।
ক্রেতা মো ইব্রাহীম জানান,পাকা রক মেলনের স্বাদ অত্যন্ত মিষ্টি। ভেতরের রঙ পাকা পেঁপের মতো। অন্যটি হালকা সবুজ ও সাদা। ভিন্নরকম এ ফল খেতেও ভিন্ন স্বাদ।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়,দোআঁশ মাটি এ ফল চাষের জন্য বেশ উপযোগী। যেখানে রক মেলন চাষ করা হয়েছে সেটি উঁচু অঞ্চল। দোআঁশ মাটি সমৃদ্ধ।ক্যালসিয়াম,আয়রণসমৃদ্ধ এ ফল মানবদেহ শীতল রাখতে সাহায্য করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো কামরুজ্জামান জানান,
সাধারণ তরমুজের চেয়ে এর স্বাদ অনেক ভালো, মিষ্টিও বেশি।এটি একটি লাভজনক ফসল। এই ফলের চাষাবাদ বৃদ্ধিতে কৃষককে সহযোগিতা করবে কৃষিবিভাগ।