গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আর্ন্তজাতিক গুম সপ্তাহে ফেনীতে মানববন্ধন করেছে মানবাধিকার কর্মী ও গুমের স্বীকার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের শহিদ শহিদুল্লা কায়সার সড়কে ‘মায়ের ডাক’ শীর্ষক হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স নেটওয়ার্ক, ফেনী’র আয়োজনে ‘গুম বন্ধ কর, গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও’ শ্লোগানে মানববন্ধনে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধিকার ফেনী’র ফোকালপার্সন ও দৈনিক মানবজমিনের ফেনী প্রতিনিধি নাজমুল হক শামীম। মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ফেনী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও ডিবিসি নিউজের ফেনী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবু তাহের ভূইয়া। মানবাধিকার কর্মী তন্বী সোম’র সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ফেনী জেলা শাখার সভাপতি ও মানবাধিকার কর্মী মোস্তফা কামাল বুলবুল, ফেনী গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলী নসু, গুমের স্বীকার হওয়া যুবদল নেতা মাবুবুর রহমান রিপনের মা রৌশন আরা, বড় ভাই মাহফুজুর রহমান, মেঝ ভাই মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ। , এ সময় গুমের শিকার রিপনের চাচা ওহিদুর রহমান, রিপনের বড় মেয়ে ফারিয়া আক্তার নিশাত, ছোট মেয়ে ফাহিমা আক্তার নাওফি, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী কাজি ইকবাল আহমেদ পরান, ইংরেজী শিক্ষক ও মানবাধিকার কর্মী আবদুস সালাম, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী এমডি মোশারফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দিবসের মুল প্রবন্ধে জানানো হয়, অধিকার এর তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ সালের ১ লা জানুয়ারী থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে ৫৯৮ জন গুমের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা গুম ও বিচারবহির্ভূতভাবে মানুষ খুন হলো রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের চরম বহিঃপ্রকাশ। নিপীড়নকারী রাষ্ট্র ব্যবস্থা শুধু গুম বা μসফায়ারের মতো ঘটনাই ঘটায় না, সমাজের প্রত্যেক ক্ষেত্রে ভিনড়ব মতকে দমন করে। বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন বহাল থাকায় মানবাধিকার চরমভাবে হুমকির সম্মুখিন হচ্ছে। জনগনের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সব ধরনের অন্যায়-অবিচারের প্রতিকার করতে ভিকটিম পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। মানববন্ধনে বক্তারা গুমের শিকার ব্যক্তিদের তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, ফেনীর যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান রিপনকে আইনশৃঙ্খরা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ৭ বছরের পরিবার তার হসিদ পায়নি। রিপনের মত আর কোন ব্যাক্তি যেন গুমের শিকার না হয় সেজন্য রাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার দাবি জানান। প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর ‘গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সনদ’টি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন-এমন একটি চুক্তি যা অনুস্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে প্রতিটি রাষ্ট্রের আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে