মোঃ হাবিবুল ইসলাম রিয়াদ, সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি সোনাগাজী উপজেলার কৃষকরা আসন্ন ইরি-বোরো ধান চাষের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে। ইরি-বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। শীত উপেক্ষা করে দিন-রাত জমিতে সেচ দেয়া, জমিতে চাষ দেয়া, বীজতলা থেকে চারা তোলাসহ বোরো ধান চাষের নানা কাজে এখন দারুণ ব্যস্ত। মাঠে ব্যস্ততা দেখে ও তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে চাষাবাদ করে বাম্পার ফলনের মধ্য দিয়ে তারা বিগত সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান। এদিকে ধানের ন্যয্য মূল্য পাওয়ায় অনেক কৃষক অন্য ফসল বাদ দিয়ে ঝুঁকছেন ইরি চাষে। উপজেলার ১টি পৌরসভা সহ মোট ১০ টি ইউনিয়নের প্রায় ১২৭০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষ করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক-কৃষাণিরা। আর কয়েকদিন পরই পুরোদমে মাঠে ব্যস্ত দেখা যাবে তাদের। উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিল, নদীর অববাহিকায় ইতিমধ্যেই ইরি-বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। কেউ বীজতলায় সার দিচ্ছে, কেউ দিচ্ছে পানি। উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন কৃষকরা জমি ইরি-বোরো চাষের উপযোগী করছে। ইঞ্জিনচালিত ট্রাক্টর দিয়ে মাটি আলগা করার পাশাপাশি সার দেয়া ও শ্যালো মেশিন বসাতে শুরু করেছে। ব্যস্ত হবে প্রধান কৃষিপণ্য ধান চাষে। সোনাগাজী উপজেলা উপকূলীয় হওয়ায় সবর্ত্র বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে প্রায় ৩-৪ মাস ফসলী মাঠ পানির নিচে থাকে। সে ক্ষতিকে কাটিয়ে নিতে এ ইরি চাষে ঝুকছে কৃষক। প্রস্তুত হয়ে গেছে শ্যালো ও বিদ্যুৎচালিত সেচ মেশিন। তবে খাল-বিলের নিকটবর্তী জমিগুলোতে ইতিমধ্যেই ধান চাষ শুরু হয়ে গেছে। তীব্র শীত ও শৈত্যপ্রবাহে ধমাতে পারবে না কৃষকদের এ সাহসীকতা রেখেই ব্যস্ত কৃষক। আবহাওয়া অনুকলে থাকলে গত বছরের ন্যয় এবারও ইরি-বোরো চাষাবাদ ভালো হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা। সোনাগাজী উপজেলার ফসলী মাঠগুলো ইরি-বোরো চাষাবাদের জন্য এখন প্রস্তুত। সোনাগাজী উপজেলার ২১শ কৃষকের মাঝে প্রণোদনা দেয়া হয়। এর মধ্যে ১শ জন কে ১কেজি করে ও ২ হাজার জন কে ২কেজী করে হাইব্রিড ধানের বীজ দেয়া হয়। এবং ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি করে এমওপি সার দেয়া হয়। এছাড়া গত বছর আবাদী জমির পরিমাণ ছিল ১১শ ১৫ এবছর বেড়ে ১২৭০ হেক্টর জমি আবাদ হবে বলে আশা প্রকাশ করছে। চরচান্দিয়া ইউনিয়নের কৃষক জহির উদ্দিন বলেন, সরকার যেভাবে প্রণোদনা দিচ্ছে এবং ন্যয্য মূল্যে কৃষকের ধান ক্রয় করতে পারছে এটি স্থিতিশীল থাকলে অনেক কৃষক আগ্রহী হবে। এবং অর্থনৈতিক ভাবেও স্বাবলম্বী হবে। এর পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার যদি আরো বাড়ানো যায় তাহলে আরো এক তৃতীয়াংশ লাভ বেশি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, কৃষকদের প্রণোদনা দিয়ে আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে বলে তারা আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি আগ্রহী। ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় ধীরে ধীরে স্বাবলম্বীও হচ্ছে। আগামীতে প্রণোদনা বাড়াতে পারলে ও ন্যায্য মূল্য পেলে আরো বৃদ্ধি পাবে ইরি চাষে।