ইয়াছির আরাফাত রুবেল
আর মাত্র ৬ দিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফেনী পৌর নির্বাচন। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জনগণের মধ্যে নির্বাচনী আমেজ বাড়ছে। এ উপলক্ষ্যে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা এখন তুঙ্গে। নির্বাচনকে ঘিরে শহর ছেয়ে গেছে পোস্টারে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট, অলিগলি, পাড়া-মহল্লায় প্রার্থীদের সাদাকোলো বিভিন্ন ডিজাইনের পোস্টার টাঙানো হয়েছে। অন্য সময়ে মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচন জমে উঠলেও এ বছর সম্পূর্ণ অন্য ধরনের এক আমেজ বইছে ফেনী পৌর শহরে। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। কার চেয়ে কে বেশি পোস্টার লাগাবে তা নিয়ে যেন চলছে প্রতিযোগিতা।
ফেনী পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বি থাকলেও বরাবরের মতোই ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা আর বিএনপির প্রতীক ধানের শীষের মধ্যে। আ’লীগের জয় সুনিশ্চিত বলে আশা প্রকাশ করেন আ’লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। বিএনপি প্রার্থী ও সমর্থকরা বলছেন, এবার মানুষ পরিবর্তন চায়। জয়ের ব্যাপারে তারা শতভাগ আশাবাদী। মেয়র প্রার্থীরা হচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী (নৌকা), বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আলাল উদ্দিন আলাল (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির ইয়ামিন হাসান ইমন (লাঙল), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) তারিকুল ইসলাম (সিংহ) এবং ইসলামী আন্দোলনের মো. গোলমুর রহমান আজম (হাত পাখা)।
১৮নং ওয়ার্ডের ভোটার মো. আবদুল কুদ্দুস বলেন, পোস্টার আমাদের ওয়ার্ডেই বেশি লাগানো হয়েছে। বিরক্ত লাগে আবার ভালোও লাগে, মনে হয় কাগজের উৎসব চলছে। মাইক দিয়ে প্রচারণার চেয়ে পোস্টারই ভালো।
ভোটার মোজাম্মেল হোসেন বলেন, পোস্টার লাগানো হয়েছে ভালো কথা। কিন্তু বেশি পোস্টার লাগানোর কারণে হিজিবিজি দেখা যায়। প্রার্থীর সমর্থকরা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই পোস্টার লাগিয়েছেন।
ভোটার রবিউল হক ভূঞা বলেন, পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এত বেশি পোস্টার লাগানোর কারণে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। বিদ্যুতের পিলারের সঙ্গে অনেক পোস্টার টাঙানো আছে, হঠাৎ যদি কাগজে আগুন লেগে যায় তাহলে পুরো ওয়ার্ডে আগুন ছড়িয়ে যাবে।
ভোটার আনোয়ার হোসেন বলেন, আসলেই অন্য নির্বাচনের চেয়ে এ নির্বাচনটা অনেক জমে উঠেছে। পুরো শহর পোস্টারে ছেয়ে গেছে। অপেক্ষায় আছি কখন ৩০ তারিখ আসবে, আর নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিব।
২৭.২০ বর্গকিলোমিটারের ফেনী পৌরসভার ৪৭ হাজার ৩০৭ জন পুরুষ ও ৪৪ হাজার ৩৫৫ জন মহিলা ভোটারসহ মোট ৯১ হাজার ৬৬২ ভোটারের এই শহরে ভোটগ্রহণ অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার নাছির উদ্দিন পাটোয়ারি। আগামী ৩০ জানুয়ারি ফেনী পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৮টি সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ৬টি মহিলা কাউন্সিলর পদের মধ্যে ৯টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় ১৫ জন কাউন্সিলরের জয় নিশ্চিত হয়ে গেছে। তাদের বেসরকারিভাবে বিজয়ীও ঘোষণা করা হয়েছে।