সাধন নাথ ‘সনাতনী সেতু বন্ধনে কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সত্য ও শান্তির অন্বেষণে তারুণ্যের অভিযাত্রা ও মঙ্গলালোকে আলোকিত হোক মানবজীবন’ এ শ্লোগান নিয়ে শারদাঞ্জলি ফোরাম ফেনী শাখার উদ্যোগে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও “৪র্থ তীর্থ পরিক্রমা” সম্পন্ন করেছে। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে এবার খুবই সীমিত সংখ্যক সারথি নিয়ে কোন ধরনের প্রচারণা ছাড়াই শুধুমাত্র সারথি ও সারথি পরিবার নিয়েই এবারের তীর্থ পরিক্রমায় যেতে হয়েছে। এ বছরের গন্তব্য ছিলো দিনাজপুর জেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক কান্তজীর মন্দির। তবে এবারের তীর্থ পরিক্রমার সাথে যুক্ত হয়েছে আনন্দ ভ্রমণ। বৃহ¯পতিবার সন্ধ্যা ৭:৪৫ মিনিট সারথিগণ রওনা হয়ে পরদিন শুক্রবার সকাল ১০টায় দিনাজপুর কান্তজী মন্দিরে পৌঁছে। সেখানে দিনাজপুর জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী নারায়ণ রায় তাদের অভ্যর্থনা জানান। পরে তাদের সাথে মিলিত হন নীলফামারি জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী অরবিন্দু রায়ের নেতৃত্বে একঝাঁক সারথি। মন্দির প্রাঙ্গণে এক চমৎকার মিলন মেলার সৃষ্টি হয়। নারায়ণ রায় এবং অরবিন্দু রায়ের আতিথিয়েতায় ফেনী জেলার সারথিবৃন্দ বিশেষভাবে মুগ্ধ হন। এই জন্য তাদের প্রতি ফেনী জেলার সারথিবৃন্দ অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। শুক্রবার দুপুরে কান্তজীর মন্দিরে প্রসাদ গ্রহণ শেষে বিকালে দিনাজপুর রাজবাড়ীর পুরানো কালীজিউর মন্দির, দুর্গা মন্দির এবং বিশাল রাজ প্রাসাদ প্রদর্শন করেন। মন্দির এবং রাজ প্রাসাদ দেখতে অনেক সুন্দর ও নান্দনিক। বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত রাজবাড়ী এবং রাজ প্রাসাদ। সেখানে পরিদর্শন শেষে রাতে আবার বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন বাংলোয় ফিরে আসেন সারথিবৃন্দ। শনিবার সকালে জয়পুরহাট জেলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে দুপুরে ১২ টায় সেখানে পৌঁছে। সেখানে বার শিবালয় (শিব মন্দির), কালীমন্দির ও রামভক্ত হনুমানজির মন্দির দর্শন করেন সারথিগণ। জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় মন্দিরের পাশেই জোড়া কালী দেবীর বিগ্রহ মন্দির দর্শন করে সারথিগণ বিকেলে নওগাঁ সোমপুর বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেন। আনন্দ ভ্রমণের একমাত্র স্থান ছিল সোমপুর বৌদ্ধ বিহার। পুরো বিকালটি কাটে বৌদ্ধ বিহার ও নওগাঁ পাহাড়পুর যাদুঘর পরিদর্শনে। শনিবার সন্ধ্যার পর সারথিগণ সোমপুর বৌদ্ধ বিহার থেকে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। রাত ৮টায় বগুড়া পৌঁছেন। বগুড়া শারদাঞ্জলি ফোরামের সভাপতি অসীম মোহন্ত এবং সাংগঠনিক স¤পাদক সবুজ রায়ের নেতৃত্বে সারথিগণ তাদের অভ্যর্থনা জানান এবং পার¯পরিক মতবিনিময় করেন। রাতে স্থানীয় মন্দিরে সারথিদের জন্য নৈশ ভোজের আয়োজন করে বগুড়া জেলার সারথিবৃন্দ। বগুড়া জেলার সারথিদের আপ্যায়নে ফেনী জেলার সারথিবৃন্দ অভিভূত হন। এজন্য তাদের প্রতি ফেনী জেলার সারথিবৃন্দ অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এই ভ্রমণে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বাবুল চন্দ্র পাল, সাধারণ স¤পাদক লিটন চন্দ্র পাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং মহানগর কমিটির সভাপতি রতন চন্দ্র পাল ও সাংগঠনিক স¤পাদক পলাশ নাথ সার্বক্ষণিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। শারিরীক অসুস্থতা সত্ত্বেও ফেনী থেকে যাত্রার প্রাক্কালে তীর্থ পরিক্রমা ও আনন্দ ভ্রমণের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বাবুল চন্দ্র পাল। শারদাঞ্জলি ফোরাম ফেনী জেলা সভাপতি শুভরাজ বণিক জানান, তীর্থ পরিক্রমার মাধ্যমে এক জেলার সারথিদের সাথে অন্য জেলার সারথিদের যোগাযোগ যেমন দৃঢ় হয়, তেমনি এক জেলার সারথিদের সাথে অন্য জেলার সারথিদের মত বিনিময়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় এবং আÍীক বন্ধন আরও বেশি দৃঢ় হয়। এছাড়াও দেশের তীর্থ স্থান এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলো পরিদর্শনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য স¤পর্কে জানার জন্য প্রতি বছর তাদের এই তীর্থ পরিক্রমার আয়োজন। এই করোনাকালীন মহা দুর্যোগের সময় ফেনী জেলার সারথিবৃন্দ ফেনী থেকে অনেক দূরে সাহসীকতার সাথে নিরাপদে এবং শান্তিপূর্ণভাবে তীর্থ ভ্রমণ সুস¤পন্ন করায় ফেনী জেলার সকল সারথিকে ধন্যবাদ জানান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বাবুল চন্দ্র পাল।