ফেনীতে পিডিবির বাড়তি বিল গ্রাহকদের ভোগান্তি চরমে ফেনীতে পিডিবির গ্রাহক সংখ্যা ৭০ হাজার। এর মধ্যে শিল্প ও বাণিজ্যিক ৫ শতাংশ, বাকি ৯৫ শতাংশ আবাসিক। প্রতি মাসেই বেশিরভাগ গ্রাহকদের বিলের কাগজ নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।একদিকে করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের আয় রোজগার কমছে,অন্যদিকে বিদ্যুত বিলের বাড়তি চাপ নিয়ে বিদ্যুত অফিসে ভীড় জমাচ্ছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রতিটি বিলের মধ্যে প্রতি মাসে মিটার রিডিং এর চাইতে অতিরিক্ত বিল করে থাকেন।পিডিবির অফিস সুত্রে জানা যায়,আবাসিক মিটারের ক্ষেত্রে প্রথম ধাপে ০-৫০ ইউনিট প্রতি দাম ধরা হয় ৩.৭৫ পয়সা,দ্বিতীয় ধাপে ০-৭৫ ইউনিট প্রতি দাম ধরা হয় ৪.১৯ পয়সা,তৃতীয় ধাপে ৭৬-২০০ ইউনিট প্রতি দাম ধরা হয় ৫.৭২ পয়সা,চতুর্থ ধাপে ২০১-৩০০ ইউনিট প্রতি দাম ধরা হয় ৬.০০ পয়সা, পঞ্চম ধাপে ৩০১-৪০০ ইউনিট প্রতি দাম ধরা হয় ৬.৩৪ পয়সা, ষষ্ঠ ধাপে ৪০১-৬০০ ইউনিট প্রতি দাম ধরা হয় ৯.৯৪ পয়সা।৬০০ ইউনিটের উর্ধ্বে দাম ধরা হয় ১১.৪৬ পয়সা। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় অফিস কর্তৃপক্ষ মিটারের সাথে সামঞ্জস্য না রেখে মনগড়া বিল করে দেন।যে মাসের বিল করা হয় সেই মাসের বিলের মধ্যে পরবর্তী মাসের বিল যোগ করে দেয়া হয়।যাদের মিটারে প্রতি মাসে ৭০ ইউনিট রিডিং ওঠে, তাদের ক্ষেত্রে বিল করা হয় ১০০ থেকে ১৫০ ইউনিট।যা ইউনিট প্রতি ৪.১৯ পয়সার পরিবর্তে বিল দিতে হয় ৫.৭২ পয়সা। অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে ১.৫৬ পয়সা ইউনিট প্রতি।আবার যাদের মিটারে প্রতি মাসে রিডিং উঠে ৩০০ -৩৫০ ইউনিট, তাদের বিল করে দেয়া হয় ৪০১ ইউনিটের বেশি।এতে ইউনিট প্রতি ৬.৩৪ পয়সার পরিবর্তে বিল দিতে হয় ৯.৯৪ পয়সা।বাড়তি দিতে হচ্ছে ৩.৬০ পয়সা ইউনিট প্রতি। প্রতি মাসে বাড়তি বিল চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে গ্রাহকদের উপর।যাদের প্রতি মাসে বিদ্যুত বিল আসার কথা পাঁচ-সাতশ টাকা তাদের বিল করে দেয়া হচ্ছে দ্বিগুন। অনেক গ্রাহকের বিলের মধ্যে তিন চার গুন বাড়তি বিল করে দেয়া হচ্ছে।মিটারের সাথে সামঞ্জস্য না রেখে বাড়তি বিল গুঁজে দিচ্ছে গ্রাহকদের উপর।জাবেদ নামে এক বাড়ির মালিক জানান,তার বাসায় ভাড়াটিয়া নেই তিন মাস।মিটারে কোনো বিল জমা না থাকলেও প্রতি মাসে ১০০ ইউনিট করে বিল করে দেয়া হচ্ছে। জামাল নামে এক বাড়ির কেয়ারটেকার জানান,তার বাড়ির মালিক ঢাকায় থাকেন।প্রতি মাসেই ভাড়াটিয়াদের বিদ্যুত বিল নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।যাদের মিটার থেকে বিল বেশি করা হচ্ছে অফিসে গিয়ে তাদের বিলের কাগজ ঠিক করে আনতে হচ্ছে।তিনি আরও জানান,অনেক ভাড়াটিয়া না বুঝে বাড়তি বিল দিয়ে দেয়।সেটা পরের মাসে আবার অফিসে গিয়ে ঠিক করে আনতে হয়।আরেক বাড়ীর মালিক জানান,তার বাসায় আটটি মিটার।প্রতি মাসে দু-একটা মিটারের বিল নিয়ে ভাড়াটিয়াদের সাথে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। তিনি জানান, একজন ভাড়াটিয়া তার মিটারে গত দু- তিন মাস বাড়তি বিল আসাতে বিল না দিয়ে আমার গায়ে বিলের কাগজ ছুড়ে মারে।তিনি আরও জানান প্রতি মাসেই মিটার রিডাররা মিটার চেক করে যাওয়ার পরও মিটারের রিডিং আর বিলের রিডিংয়ের মধ্যে তারতম্য কেনো ঘটে। তাহলে কি অফিস কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করেই এসব করছে। সাহাবউদ্দিন নামে আরেক বাড়ির মালিক জানান,আমার কলোনিতে মিটার আছে তিনটি।প্রতি মাসেই যেকোনো একটা মিটারে সমস্যা থাকবেই।অনেক সময় মিটার রিডাররা রিডিং চেক করার পর মিটারে বিল জমা থাকার পরও বিল একদম কমিয়ে করে।দু এক মাস গেলে বিল পাঁচ গুন বাড়িয়ে বিল করা হয়।তখন ভাড়া তুলে সেই বিল দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।দশ হাজার টাকা ভাড়া পেলে যদি সাত হাজার টাকা বিদ্যুত বিল দিতে হয়, নিজের পরিবারের খরচ কিভাবে চলে। এ ব্যাপারে ফেনী পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, প্রিপেইড মিটার বসলে এসব সমস্যা আর থাকবেনা।আর যারা মিটারের রিডিং লিখে তাদেরকে নিয়েও সবসময় আলোচনা হয়। মিটার রিডারদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ দিলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।