মোতাহের হোসেন ইমরান :
সোনাগাজীতে পল্লী বিদ্যুত সমিতির দায়সারা ভাববে অনুমান নির্ভর বিল প্রস্তুতের কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে গ্রহকেরা। এক দিকে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সাধারণ মানুষ ঘরবন্দি ও কর্মহীন হয়ে পড়েছে। নিন্ম থেকে উচ্চবিত্ত পর্যন্ত সবাই যখন বেকার জীবন অতিবাহিত করছে, তখন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এমন বিমাতাসূলভ আচরণে গ্রাহকদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজমান। সরকার যেখানে আবাসিক গ্রাহকদের জন্য ২০ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত বিলম্ব মাশুল মওকুফ ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে অতিরিক্ত বিল পেয়ে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভের উত্তাপ ছড়াচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে সমস্যা সমাধান করছেন বা অফিসে গিয়ে তর্কে লিপ্ত হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। চরগণেশ গ্রামের ছায়েদুল হক সুমন নামে এক গ্রাহক জানান, মার্চ মাসে তিনি তার ঘরের বিদ্যুত বিল পরিশোধ করেছেন ১৪৫ টাকা। এপ্রিল মাসে প্রাপ্ত বিলের কাগজে তার বিল এসেছে ৭৪৫টাকা, সুজাপুর গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, তার তিনটি মিটারে মার্চ মাসে বিল পরিশোধ করেছেন ৭৪৩ টাকা, অথচ এপ্রিল মাসে তিনটি মিটারে প্রাপ্ত বিলের কাগজে বিল এসেছে ১৫৭৫টাকা। এধরণের অসংখ্য গ্রাহকের একই অভিযোগ। গ্রাহকদের অভিযোগ, ক্ষোভ আর অসন্তোষের ব্যাপারে জানতে চাইলে ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সোনাগাজী শাখার ডিজিএম আবু সাঈদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে বিদ্যুৎকর্মীরা গ্রাকদের বাড়ি যেতে পারেননি। তবে গত বছরের এপ্রিল মাসের বিলের সাথে সামঞ্জস্য করে বিল প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে কিছু গ্রাহকের বিল কম ও কিছু গ্রাহকের বিল অতিরিক্ত হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাব কেটে গেলে পরে এসব বিল সামঞ্জস্য করা হবে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এই কর্মকর্তার এমন দাবি মানতে নারাজ সাধারণ গ্রাহকেরা। সরকার যেখানে অফিস আদালত বন্ধ ঘোষণা করেছে, গ্রাহকদের সুবিধার জন্য বিলম্ব মাশুল মওকুফ করার ঘোষণা করেছে, সেখানে মরার উপর খাড়ার ঘাঁ না বসিয়ে অনুমান নির্ভর বিল প্রস্তুত না করে স্থগিত রাখতে পারতো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মাওলানা ওমর ফারুক জানান, সরকার বিলম্ব মাশুল মওকুফ করেছে ৩০ টাকা, আর অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে ৫৪০টাকা, এই মওকুফ ঘোষণার কি দরকার ছিল? তারা নিয়মিত বিল পরিশোধ করে আসছেন। ঘর থেকে বের হতে না পারার কারণে হয়তোবা বিলম্বে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিলের কারণে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। শাহাব উদ্দিন নামে এক গ্রাহক জানান, তিনি মার্চ মাসে বিল পরিশোধ করেছেন ২০০টাকা, এপ্রিল মাসের প্রাপ্ত বিলের কাগজে বিল এসেছে ১৫০০টাকা। আল ফারুক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ বদরুদ্দোজা জানান, তিনি অতিরিক্ত বিলের কাগজ নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরি বলে বিল কমিয়ে নিয়েছেন। সব গ্রাহকতো তার মত হয়তো সচেতননা। তিনি এর প্রতিকার চান।