পেয়ার আহাম্মদ চৌধুরীঃ
পরশুরাম উপজেলার পৌর এলাকার গুথুমার নিজ গ্রামে পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল তার নিজস্ব জমিতে গড়ে তুলেছেন ফেনী জেলার সবচেয়ে বড় গরুর খামার। নিতান্তই শখের বশে গড়ে তোলা খামারটি যেমন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত তেমনই উজ্জ্বল সম্ভবনাময় খামারের স্বীকৃতি লাভ করেছেন। উপজেলা প্রশাসন ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের মতে, মেয়র সাজেল চৌধুরী জেলায় বাণিজ্যিকভাবে সবচেয়ে বড় গরুর খামার করে প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। জেলার বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে ৬০টির বেশি ছোট-বড় খামার থাকলেও জেলার সবচেয়ে বড় গরুর খামার গড়ে তুলেছেন সাজেল চৌধুরী। তার খামারে বর্তমানে রয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক গরু। গত এক বছর যাবত শুধুমাত্র কোরবানীর ঈদে বিক্রির উদ্যেশ্যে গরুগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে। যার সম্ভাব্য বাজার দর হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা। এছাড়াও সাজেল চৌধুরী খামারে গত ছয় মাসে সহশ্রাধিক গরু বিক্রি করেছেন। সাজেল চৌধুরীর গরুর খামার এলাকায় ব্যাপক পরিচিত লাভ করায় স্থানীয়ভাবে গরুর চাহিদা পুরণ করে জেলার বাহিরেও তা বিস্তৃতি লাভ করেছে। তাছাড়া ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনীসহ আশপাশের এলাকার খামারিরা তা দেখতে আসছে। পাশাপাশি বেকার যুবকরা তাকে দেখে গরু খামার করার দিকে ঝুকছেন। এছাড়া কোরবানির জন্য ফেনী ও ফেনীর বাইরের জেলা থেকেও লোকজন গরু কিনতে ছুটে আসছেন তার খামারে।
মেয়র সাজেল চৌধুরী জানান, নওগাঁ, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম থেকে উন্নতজাতের গরুগুলো ক্রয় করে নিয়ে আসেন তার খামারে। তার খামারের গরুগুলোকে কোন প্রকার কৃত্রিম ঔষধ প্রয়োগ করা হয় না এবং প্রকৃতিক ভাবেই লালন-পালন করা হচ্ছে গরুগুলোকে। এ গরুর খামার পরিচালনার কাজে দুই শিপটে কাজ করেন অভিজ্ঞ ২৪ জন কর্মচারী। সাজেল চৌধুরীর এ বিশাল গরু খামার পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন। তার গরুর খামার দেখে ভুয়সী প্রশংসা করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তিনি আরো জানান, গত দুই বছর ধরে গরুর খামার দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তার খামারে বর্তমানে প্রায় ৫ শতাধিক গরু রয়েছে। আসন্ন কোরবানির ঈদেই তার গরুগুলো বিক্রি করা হবে। ভবিষ্যতে বড় আকারের একটি ডেইরী খামার করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
এছাড়া তিনি বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৫৩টি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন। তার পুকুরে রুই, কাতল, বোয়াল, পাঙ্গাস, কই, শিং, মাগুর সহ বিভিন্ন দেশী জাতের মাছের চাষ করছেন। চলতি বছরে
জেলায় সফল মৎস্য চাষী ও উপজেলায় টানা আট বার শ্রেষ্ঠ মৎস্য চাষী হিসাবে পুরস্কার লাভ করেছেন সাজেল চৌধুরী। মাছ চাষ ও গরুর খামারে স্থানীয় বেশ কিছু বেকার যুককের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসুলুল কাদের জানান, সাজেল চৌধুরীর খামার বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছে। তার খামার দেখে অনেকে খামার করতে উৎসাহী হবেন।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন জানান, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে মেয়রের খামারে গরু মোটা তাজাকরণ করা হচ্ছে। এ খামারে কোন ধরনের ইনজেকশন দেয়া হয় না। প্রাণী সম্পদ হাসপাতাল থেকে
নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।