মোতাহের হোসেন ইমরান :
ফেনী-৩ সোনাগাজী আসনের সাবেক তিন বারের সাংসদ, ফেনী জেলা আ'লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা এবিএম তালেব আলীকে তিন দফা নামাজে জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরাস্থানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দাফন করা হয়েছে।
তিনি আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় ফেনীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরন করেন । মৃত্যুকালে তিনি ২ ছেলে, তিন মেয়ে, নাতি নাতনি সহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বাদ জোহর ফেনী শহরের মিজান ময়দানে প্রথম জানাজা, তার হাতে প্রতিষ্ঠিত বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে দ্বিতীয় জানাজা এবং চরলক্ষীগঞ্জ নাজেরিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা মাঠে তৃতীয় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরাস্থানে সমাহিত করা হয়।
তিনি বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক ছিলেন। আমৃত্যু তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন। তিনি ফেনী-৩ আসনে ১৯৭০ সালে, ৭৩ সালে ও ৭৯ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৮১সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেছেন। তিনি ফেনী জেলা আ'লীগের সাধারন সম্পাদক, ও কেন্দ্রীয় আ'লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেছিলেন। তার নাতি মো. শহীদ উল্যাহ জানান, ১৯৮৩ সালে তিনি জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হত্যাকান্ড নিয়ে বক্তব্য রাখার সময় মাইক্রো ফোন বন্ধ করে দিলে সংসদ অধিবেশনে হার্ট স্ট্রোক করেন। পরে তাকে সরকারি খরচে বিদেশে চিকিৎসা করানো হয়। এর পর থেকে তিনি ডায়াবেটিস, হৃদ রোগ , অ্যজমা সহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভোগেন। তার জানাজার নামাজে অংশ নেন ফেনী-২ আসনের সাংসদ, নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের সাংসদ মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজ আহম্মদ চৌধুরী, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল পারভেজ, সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র, উপজেলা আ'লীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হাজী মো. আবু সুফিয়ান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মীর আবদুল হান্নান, উপজেলা কমান্ডার সৈয়দ নাছির উদ্দিন সহ হাজারো মুসল্লি। তার হাতে গড়া বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়কে কলেজে রূপান্তরিত করার শেষ স্বপ্ন দেখে যেতে পারেননি তিনি। সংসদ সদস্য বৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে এলাকাবাসী তার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার দাবী জানান। তার কফিনে দুই সাংসদ, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, জেলা আ'লীগ, উপজেলা আ'লীগ, উপজেলা পরিষদ, মেয়র, এনসিসি ব্যাংক, বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান। তালেব আলী উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের চরগোপাল গাঁও গ্রামের মরহুম মাও. সাদাত আলীর ছেলে। তিনি ১৯২৬ সালে জন্মগ্রহন করেন। ৯৩ বছর বয়সী এই বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে দেশের অপুরণীয় ক্ষতি হয়েছে।