এস এম সায়েম
ফেনীতে পিডিবির গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে ৬০ হাজার ৫শ। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ হচ্ছে আবাসিক গ্রাহক। বাকী ৫ শতাংশ রয়েছে বাণিজ্যিক ও শিল্প গ্রাহক। ফেনীতে পিডিবির বিদ্যুৎ বিল নিয়ে গ্রাহকরা বিভিন্নভাবে হয়রানীর স্বীকার হচ্ছেন। গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রতিটি বিলের মধ্যে প্রতিমাসে মিটার রিডিং এর চাইতে অতিরিক্ত বিল করে থাকেন। পিডিবির অফিস সুত্রে জানা যায়, আবাসিক মিটার এর ক্ষেত্রে প্রথম ধাপে ০-৭৫ ইউনিট প্রতি দাম ধরা হয় ৪.০০ পয়সা। দ্বিতীয় ধাপে ৭৬-২০০ ইউনিট প্রতি দাম ধরা হয় ৫.৪৫ পয়সা। তৃতীয় ধাপে ২০১-৩০০ ইউনিট প্রতি দাম ধরা হয় ৫.৭০ পয়সা। চতুর্থ ধাপে ৩০১-৪০০ ইউনিট প্রতি দাম ধরা হয় ৬.০২ পয়সা। পঞ্চম ধাপে ৪০১-৬০০ ইউনিটের দাম ধরা হয় ৯.৩০ পয়সা। ষষ্ঠ ধাপে ৬০০ ইউনিটের উর্দ্ধে দাম ধরা হয় ১০.৭০ পয়সা। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় মিটার রিডাররা মিটারের সাথে সামঞ্জস্য না রেখে মন গড়া বিল করে দেন। যে মাসের বিল করা হয় সেই মাসের বিলের মধ্যে পরবর্তী মাসের ১৫ থেকে ২০ দিনের বিলও সংযুক্ত করে দেওয়া হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে যাদের মিটারে প্রতি মাসে ৭০ ইউনিট রিডিং ওঠে তাদের ক্ষেত্রে বিল করা হয় ১০০ থেকে ১৫০ ইউনিট। যা ইউনিট প্রতি ৪.০০ পয়সার পরিবর্তে বিল দিতে হয় ইউনিট প্রতি ৫.৪৫ পয়সা। অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে ১.৪৫ পয়সা ইউনিট প্রতি। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যাদের মিটারের প্রতি মাসে রিডিং ওঠে ৩০০ থেকে ৩৫০ ইউনিট, তাদেরকে বিল করে দেওয়া হয় ৪০১ ইউনিটের বেশি। এতে করে ইউনিট প্রতি ৬.০২ পয়সার পরিবর্তে বিল করা হয় ৯.৩০ পয়সা। অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে ৩.২৮ পয়সা ইউনিট প্রতি। এভাবে পিডিবি’র কর্তৃপক্ষ প্রতিমাসে বিল করে যাচ্ছেন। এতে করে গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল আদায় করে নিচ্ছেন। বেশ কয়েকজন গ্রাহক জানান, তারা এ ব্যাপারে অফিসে অভিযোগ করলে দু’এক মাস ঠিক থাকে। তারপর আবার আগের মতো বিল করে দেওয়া হয়। এ জন্য গ্রাহকরা মিটার রিডারদেরকে দায়ী করছেন। কারণ তাদের হাতে কিছু টাকা গুজে দিলে তারা ঠিকভাবে বিল করেন। তা না হলে গ্রাহকদেরকে হয়রানীর স্বীকার হতে হয় মাসের পর মাস। রামপুরের খায়ের নামে এক গ্রাহক জানান, তার প্রতি মাসে মিটার থেকে ১০০ থেকে ১৫০ ইউনিট বিল বেশি করে দেওয়া হয়। পশ্চিম উকিল পাড়ার ফিরোজ নামে আরেক গ্রাহক জানান, তিনি প্রতি মাসে মিটার চেক করে দেখেন তার মিটারে গড়ে ১৫০ ইউনিট রিডিং উঠে। কিন্তু তারা প্রতি মাসে ৩০০ ইউনিট বিল করে দেন। এতে তার ১৫০ ইউনিট প্রতি ৫.৪৫ পয়সার পরিবর্তে বিল দিতে হয় ইউনিট প্রতি ৬.০২ পয়সা। এভাবে কয়েক হাজার গ্রাহক প্রতি মাসে হয়রানীর স্বীকার হচ্ছেন। একইভাবে মাস্টার পাড়ার ইয়াছিন নামে এক গ্রাহক জানান, তার মিটারের ডিসপে¬তে কোন রিডিং দেখা যায় না। মিটারের রিডিং না দেখে বিল করে দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ অফিসে জানালে তারা তার অভিযোগ ঠিকভাবে আমলে নেন নি। বিদ্যুৎ বিলের হয়রানির ব্যাপারে ফেনীর পিডিবির নির্বাহী প্রকোশলী শহিদুল ইসলামের সাথে আলাপ করলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, মিটার রিডারদের বিশৃঙ্খলার কারণে এই ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিবেন বলেও জানান। তিনি আরও জানান, আগামী আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ফেনীতে প্রিপেইড মিটার সংযোগ দেওয়া হবে। এতে করে গ্রাহকদের ভোগান্তি অনেকটা কমে যাবে।